নিজস্ব প্রতিবেদক
আরটিএনএন: গৃহকর্ত্রী হত্যার ঘটনায় ২৪ বছর ধরে কনডেম সেলে থাকা গৃহকর্মী শরীফা বেগম ও আব্দুস সামাদ আজাদের মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আপিল বিভাগ। অবিলম্বে তাদের সাধারণ সেলে স্থানান্তরের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ রায় দেয়।
আপিল আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। তিনি বলেন, ২৪ বছর ধরে গৃহকর্মী শরীফা বেগম ও আব্দুস সামাদ আজাদ নামের আরেকজন কনডেম সেলে আছেন। দেশের ইতিহাসে তারাই সবচেয়ে বেশি সময় কনডেম সেলে আছেন।
গত ১ জুলাই একটি দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে, ১৯৯৮ সালের ২২ মে রাজধানীর মতিঝিল থানার অধীন শান্তিনগর এলাকার ১১৪/৩ ভবনের চতুর্থতলার একটি ফ্ল্যাটে রুবিনা আক্তার নামে এক নারীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ঘটনার সময় রুবিনার স্বামী মাঈন উদ্দিন আহমেদ ঋতু চাকরি সূত্রে যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন। তাদের দুই বছর বয়সি মেয়ে মাইসা হত্যাকাণ্ডের সময় অক্ষত থাকে।
এ ঘটনায় নিহত রুবিনার বড় ভাই জাফর ইমাম মতিঝিল থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। পরে পুলিশ আবদুস সামাদ আজাদ ওরফে সামাদ, শরীফা, এমদাদুল হক এমদাদ ও আবু ইউসুফ নিয়াজী ওরফে আরিফকে গ্রেফতার করে। তদন্ত শেষে এই চারজনকে আসামি করে একই বছরের ১৫ জুন আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
একই বছরের ২১ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর অতিরিক্ত দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। ২০০০ সালের ৩১ অক্টোবর সামাদ ও শরীফাকে মৃত্যুদণ্ড, এমদাদ ও আরিফকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। রায়ের দিন সামাদ ও শরীফাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় ফাঁসির আসামিদের সেলে।
মামলায় বলা হয়- রুবিনার ফ্ল্যাটে গৃহকর্মীর কাজ করতেন শরীফা। একই ভবনের তৃতীয় তলার একটি ফ্ল্যাটে গৃহকর্মী সামাদের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক হয়। এ নিয়ে শরীফাকে মারধর করে তাড়িয়ে দেন রুবিনা।
আসামি আরিফ ও এমদাদ ছিলেন ওই ভবনের দারোয়ান। শরীফার সঙ্গে সামাদের বিয়ে দিতে এবং রুবিনার ওপর প্রতিশোধ নিতে আসামিরা পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।
পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার পর প্রধান বিচারপতির নজরে এলে তিনি শরীফার আপিল মামলাটি শুনানির উদ্যোগ নেন।
Comments