আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আরটিএনএন: গাজা-ইসরাইলের সংঘাতের মাঝেই ইরানের সঙ্গেও সংঘাত তীব্র হয়েছে তেল-আবিবের। এ নিয়ে ইরান ও ইসরাইল দু’পক্ষই একে অপরকে দিচ্ছে প্রচ্ছন্ন হুমকি। ইসরাইলের কারণে ইরানের অস্তিত্ব সংকটের মুখে পড়লে তেহরান তার পারমাণবিকনীতি পরিবর্তন করবে।
এমনটাই বলছে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির উপদেষ্টা কামাল খাররাজি। বৃহস্পতিবার ইরানের স্টুডেন্ট নিউজ নেটওয়ার্কের এক প্রতিবেদনে ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে পারে বলে পালটা হুঁশিয়ারি দেন খাররাজি। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
খাররাজি বলেছেন, ‘আমাদের পারমাণবিক বোমা তৈরির কোনো সিদ্ধান্ত নেই। কিন্তু ইরানের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়লে সামরিক মতবাদ পরিবর্তন করা ছাড়া আমাদের কোনো বিকল্প থাকবে না।’ তবে এ মন্তব্যের পর ইরান দীর্ঘদিন ধরে শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচি চালাচ্ছে বলে যে দাবি করে আসছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তেহরানের বরাবরই দাবি, তাদের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে পশ্চিমা সরকার সন্দেহ করে আসছে, পারমাণবিক কর্মসূচির নামে পারমাণবিক বোমা তৈরির খুব কাছাকাছি চলে গেছে ইরান।
১৯৭৯ সালে সংগঠিত ইসলামি বিপ্লবের মধ্য দিয়ে অর্জিত রাষ্ট্রীয় পদ্ধতিকে অটুট রাখতে ইরানে তৈরি হয় রেভুলশনারি গার্ড। যার নেতৃত্বে থাকেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি। খামেনি পরবর্তীতে পারমাণবিক অস্ত্রের বিষয়ে চূড়ান্ত বক্তব্য রাখেন। ২০১৯ সালে তিনি ফতোয়া বা ধর্মীয় আদেশে ইরানে পারমাণবিক অস্ত্রের বিকাশ নিষিদ্ধ করেছিলেন। এটিকে ‘হারাম’ বা ইসলামে নিষিদ্ধ বলে সে সময় মন্তব্য করেন তিনি।
কিন্তু ২০২১ সালে ইরানের তৎকালীন গোয়েন্দা মন্ত্রী বলেন, পশ্চিমা দেশগুলো ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্রের দিকে ঠেলে দিতে চাপ প্রয়োগ করছে। আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (আইএইএ) তথ্যমতে, ইরান ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে। এই ইউরেনিয়ামের প্রায় ৯০ শতাংশ অস্ত্র তৈরির জন্য সমৃদ্ধ হয়েছে। পারমাণবিক উপাদান আরও সমৃদ্ধ হলে তা ভয়াবহতা আরও বাড়াবে।
গত ১৩ এপ্রিল তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইসরাইলে হামলা চালায় ইরান। তেহরান বলেছে, ১ এপ্রিল দামেস্কে তার দূতাবাস প্রাঙ্গণে একটি সন্দেহভাজন ইসরাইলি হামলার প্রতিক্রিয়া হিসাবেই হামলাটি চালানো হয়েছিল। এই হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিয়েছে ইসরাইল। যদিও এখন পর্যন্ত ইরানে সরাসরি হামলা চালায়নি ইসরাইল।
Comments