Image description

নিউজ ডেস্ক
আরটিএনএন: কবে ট্রেন পরিচালনা স্বাভাবিক হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। দেশ এখনও স্বাভাবিক ছন্দে ফেরেনি। কারফিউ চলছে, আবার কারফিউ শিথিলও হচ্ছে। এমন অবস্থায় সরকারি এবং বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান খুলছে। সড়কে যানবাহন চলছে। কিন্তু, সাধারণ মানুষের অন্যতম বাহন ট্রেন চলাচল এখনও বন্ধ রয়েছে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে ১৮ জুলাই থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। বন্ধ হয়েছে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে চলা ট্রেনগুলোও। এমন অবস্থায় প্রতিদিন ৪ কোটি টাকার বেশি লোকসান গুনছে রেল। বৃহস্পতিবার কম দূরত্বের মধ্যে কয়েকটি ট্রেন চালানোর মৌখিক নির্দেশনা থাকলেও কারফিউ চলা এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় তা বাস্তবায়ন হয়নি। এমন অবস্থায় রেলওয়ের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাধারণ যাত্রীরা। যাত্রীদের প্রত্যাশা, দ্রুত সময়ের মধ্যে ট্রেন পরিচালনা করবে সরকার।

এ প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার বিকালে রেলপথমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জিল্লুল হাকিম বলেন, ‘ট্রেন পরিচালনার সঙ্গে সম্পৃক্ত জনবল পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেই ট্রেন চালানো হবে। আমাদের কাছে ট্রেনের সাধারণ যাত্রীদের নিরাপত্তা ও রেল সম্পদ রক্ষা সবচেয়ে জরুরি। জামায়াত, শিবির এবং বিএনপির নাশকতাকারীরা ওতপেতে আছে। রেলে সহিংসতা ঘটিয়েছে তারা। মামলা হয়েছে, এক এক করে সবাইকে গ্রেফতার করা হবে। রেলওয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সতর্কাবস্থানে আছে। পুনরায় রেলে সহিংসতা ঘটালে নাশকতাকারীদের চরম মূল্য দিতে হবে।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘বর্তমান সরকার রেলে একের পর এক উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ-বাস্তবায়ন করছে। দেশবিরোধীরা তা সহ্য করতে পারছে না। কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে রেলে কোচ, ইঞ্জিনসহ বহু স্টেশন ভাঙচুর করা হয়েছে। অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমাদের যা যা করণীয় তা করব।’

এদিকে ৮ দিন ট্রেন পরিচালনা বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার সীমিত আকারে কম দূরত্বের মধ্যে কয়েকটি ট্রেন পরিচালনার কথা ছিল রেলের। কিন্তু, ট্রেন পরিচালনার সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত কর্মকর্তাদের একজন জানান, কারফিউ অবস্থায় ট্রেন পরিচালনা সম্ভব নয়। শিথিল সময়ের মধ্যে ট্রেন পরিচালনা ঝুঁকির। তাছাড়া শিথিল সময়ে ট্রেনের সময়সূচি পরিবর্তন করে ট্রেন চালানো আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠবে। কমলাপুর স্টেশনে দায়িত্বরত রেলের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জানান, শিথিল সময়ে ট্রেন পরিচালনা করা হলে সময় নির্ধারণ করা সম্ভব হবে না। তাছাড়া শিথিল সময় ধরে যাত্রী উঠানো-নামানোও সম্ভব হবে না। ট্রেন চলে নীরব-জনমানববিহীন এলাকাজুড়ে। লাইনে আগুন কিংবা গুটিকয়েক লোক লাইন অবরোধ করলে ট্রেন চালানো সম্ভব হয় না।

এদিকে ১০৬টি আন্তঃনগরসহ ৩৫৯টি যাত্রীবাহী ট্রেন এবং দুই জোড়া আন্তঃদেশীয় ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় প্রতিদিন ৪ কোটি ১২ লাখ টাকা লোকসান গুনছে রেল। মৈত্রী, বন্ধন এক্সপ্রেসসহ আন্তঃনগর ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কাটা যাত্রীদের টিকিটের সমপরিমাণ মূল্য ফেরত দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে টিকিট ফেরতের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করা হবে। ঢাকা রেলওয়ে বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা শাহ আলম কিরণ শিশির যুগান্তরকে বলেন, মৈত্রী, বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেনে টিকিট ১ মাস আগ থেকেই কাটা হয়। আন্তঃনগর ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয় ১০ দিন আগ থেকে। অগ্রিম টিকিট কাটা যাত্রীদের টিকিট মূল্য ফেরত দেওয়া হবে।

ভারত থেকে বাংলাদেশে চলাচলরত আন্তঃদেশীয় মৈত্রী, বন্ধন এক্সপ্রেস ট্রেনের অগ্রিম কাটা টিকিটের মূল্য ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারতীয় রেল। ১৮ জুলাই থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে ট্রেন যাত্রা বাতিল করা হয়েছে। বাংলাদেশের পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় রেল। বুধ ও বৃহস্পতিবার কমলাপুর ও বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কিছু যাত্রী স্টেশনে প্রবেশের চেষ্টা করছেন।