Image description

নিজস্ব প্রতিবেদক  
আরটিএনএন: কাতার ‍ও মিসরের মধ্যস্থতায় ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে আবারো শুরু হয়েছে যুদ্ধবিরতি আলোচনা। গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হলে জ্বালানি তেলের সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ার যে উদ্বেগ তা কমে যেতে পারে। এ সম্ভাবনায় গতকাল আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম কমেছে। 

অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ ব্রেন্টের দাম গতকাল আগের দিনের তুলনায় ব্যারেলপ্রতি ৪৪ সেন্ট বা দশমিক ১ শতাংশ কমেছে। প্রতি ব্যারেলের মূল্য নেমেছে ৮৬ ডলার ৬৬ সেন্টে। অন্যদিকে মার্কিন বাজার আদর্শ ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দাম ব্যারেলপ্রতি ১ থেকে ১ দশমিক ২ শতাংশ কমেছে। প্রতি ব্যারেলের মূল্য স্থির হয়েছে ৮২ ডলার ১৬ সেন্টে। খবর রয়টার্স

ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা বাজার পরিস্থিতির অন্যতম প্রভাবক। জ্বালানি তেলের দাম কমার বিষয়ে আইজি বিশ্লেষক টনি সাইকামোর বলেন, ‘গাজায় যুদ্ধবিরতি আলোচনা কার্যকর হলে চলমান ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা কিছুটা কমে আসতে পারে।’

ব্রোকার কোম্পানি এক্সএমের সিনিয়র ইনভেস্টমেন্ট অ্যানালিস্ট চারালামপোস পিসোরোস বলেছেন, ‘ডলারের বিনিময় মূল্য কমতির দিকে থাকলেও মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধবিরতির ক্রমবর্ধমান প্রত্যাশার কারণে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম কমেছে।’

এদিকে বৈরী আবহাওয়ায় রোববার যুক্তরাষ্ট্রের কর্পাস ক্রিস্টি, হিউস্টন, গ্যালভেস্টন, ফ্রিপোর্ট ও টেক্সাস সিটির বন্দরগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। হারিকেন বেরিল আঘাত হানতে পারে মাতাগোর্দা টেক্সাসেও। বন্দর বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অপরিশোধিত জ্বালানি তেল, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি), শোধনাগারগুলোয় জ্বালানি তেলের সরবরাহে বিঘ্ন ঘটতে পারে।

এ বিষয়ে পিভিএম বিশ্লেষক তামাস ভার্গ বলেন, ‘এমন পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আগেই অপরিশোধিত জ্বালানি তেল বিক্রি করে মুনাফা অর্জন করতে চাইছেন বিনিয়োগকারীরা। আর এ কারণে পণ্যটিতে মূল্যছাড় দেয়া হয়েছে।’

অন্যদিকে এসঅ্যান্ডপি গ্লোবালের প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের উৎপাদন চলতি দশকে চাহিদার তুলনায় বেশি হওয়ার আভাস দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে এ পূর্বাভাস দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি (আইইএ)।’

প্রতিবেদনে আইইএ জানায়, ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের সরবরাহ দৈনিক ৬০ লাখ ব্যারেল বেড়ে ১১ কোটি ৩৮ লাখ ব্যারেলে পৌঁছতে পারে। এর আগে এক পূর্বাভাসে জানানো হয়েছিল, এ সময় বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের চাহিদা হতে পারে ১০ কোটি ৫৪ লাখ ব্যারেল। এ হিসেবে ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দৈনিক উৎপাদন দাঁড়াবে চাহিদার তুলনায় ৮০ লাখ ব্যারেল বেশিতে।

বিশ্বব্যাপী অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে কয়েক বছর ধরেই উত্তোলন কমাচ্ছে পেট্রোলিয়াম রফতানিকারক দেশগুলোর সংস্থা ওপেক প্লাস। সম্প্রতি এক বৈঠকে উত্তোলন আরো কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কিন্তু আইইএর পূর্বাভাস অনুযায়ী, চলতি দশকে চাহিদার তুলনায় অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের উৎপাদন বেড়ে গেলে এর দাম কমবে, যার কারণে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে বৈশ্বিক জ্বালানি তেলের বাজারের ওপর ওপেকভুক্ত দেশগুলোর নিয়ন্ত্রণ।